CERN [Conseil Européen pour la Recherche Nucléaire”] বা ইউরোপীয় পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র খুবই বিখ্যাত একটা প্রতিষ্ঠান। রিসেন্টলি লার্জ হ্যাইড্রন কোলাইডার নামক পার্টকেল এক্সিলেটারের মাধ্যমে হিগস-বোসন পার্টিকেল (যেটাকে মিডিয়া “গড পার্টিকেল” বলছে ) নিয়ে গবেষণার কারণে CERN নিয়ে মিডিয়াতে অনেক আলোচনা হয়েছে।
নিচের ছবিতে যে জায়গাটা দেখা যাচ্ছে সেটা হল জেনেভাতে অবস্থিত CERN এর মূল কম্পাউন্ডের একটা অংশ। মূর্তিটা শিবের। সনাতন ধর্মের ত্রিমূর্তির প্রধান দেবতা হল মহাদেব বা শিব। সাধারণত শিবলিঙ্গ আকারে শিবের পূজো করা হয়। এর পাশাপাশি তাণ্ডব নৃত্যরত নটরাজ রূপেও শিবের ইবাদাত করা হয়।
ছবির মূর্তিটা হল নটরাজের। নটরাজের তান্ডব নৃত্য বা Dance of destruction এর পেছনের কাহিনী হল, “সকল সৃষ্টির ধ্বংস ঘটবে শিবের এই তাণ্ডব নৃত্যের মাধ্যমে।” নটরাজের ইবাদাতে যিকর করা হয় এমন একটা মন্ত্রের ইংরেজী হলঃ
“Because You love the Burning-ground, I have made a Burning-ground of my heart – That You, Dark One, hunter of the Burning-ground, May dance Your eternal dance.”
একটা বিজ্ঞান গবেষণাগারের বাইরে এরকম একটা মূর্তি রাখার সিদ্ধান্তটা বেশ অদ্ভূত, বিশেষ করে যখন আপনি এই মন্ত্রের অর্থ নিয়ে একটু চিন্তা করবেন। Dark One বলতে কাকে বোঝানো হচ্ছে এটা নিয়ে একটু ভাবা শুরু করবেন।।
আরো অদ্ভুত হল “দেবতার” এই ধ্বংসাত্মক অ্যাস্পেক্টটা নিয়ে এতোটা ফোকাস করা। ছবিটা খেয়াল করলেই দেখবেন স্ট্র্যাটিজিকালী প্লেইসমেন্ট এবং লাইটিং এর মাধ্যমে মূর্তিটাকে Larger than life একটা ইফেক্ট দেয়ার চেস্টা করা হয়েছে। শুধু এটাই না, CERN তাণ্ডবনৃত্য বা Dance of Destruction নিয়ে বেশ কিছু ভিডীও পর্যন্ত বানিয়েছে যেখানে তাদের বিজ্ঞানীদের নটরাজের অনুকরণে নাচতে দেখা যাচ্ছে। এই মূর্তির সামনে CERN এর বিজ্ঞানীদের এমন একটি ভিডিও আছে যেখানে তারা হিউম্যান স্যাক্রিফাইস জাতীয় কোন রিচুয়াল পালন করছে। ভিডিও লিঙ্কঃ https://www.youtube.com/watch?v=m6ieuw3OV_s [ভিডিওটা অথেনটিক। CERN থেকে এটা নিয়ে বক্তব্যও দেওয়া হয়েছে। তবে ভিডিওর মহিলাকে কি আসলেই মারা হয়েছে নাকি পুরো ব্যাপারটা সাজানো অভিনয় ছিল সেটা পরিষ্কার না। ভিডিওর পেছনে অডিও অগ্রাহ্য করতে পারেন।]
এই ব্যাপারটা নিয়ে এতোটা চিন্তা করা হাস্যকর হতো যদি এটা কোন কম বয়েসী ছেলেপেলের দেয়ালে টাঙ্গানো পোস্টার হত। কিন্তু যখন পৃথিবীর সবচাইতে বড় পারমানবিক গবেষনাগার, “গড পারটিকেল”-এর ব্যাপারে গবেষণার জন্য তৈরি করা কম্পাউন্ডেের সামনে একটা পৌরাণিক “গডের” মূর্তি স্থাপন করে, এই “গডের” ধ্বংসনৃত্যর অনুকরণে নাচে এবং সেটা নিয়ে ভীডীও বানায় তখন ব্যাপারটা আর হালকা মনে হয় না। খুব ডীস্টারবিং মনে হয়। মনে হয় শিব/নটরাজ নিয়ে CERN এর ফ্যাসিনেশান টীনেজারদের দেয়ালে রকস্টারদের পোস্টার লাগানো গোছের কিছু না। বরং এটা তাদের আক্বিদার সাথে সম্পর্কিত কিছু একটা হবার সম্ভাবনাই বেশি জড়ালো মনে হয়। কোন একটা অদ্ভুত কারণে তারা ধ্বংসের দেবতার পূজো করছে।
ইন্টারেস্টিং একটা তথ্য হল শিবকে ধরা হয় বৈদিক রুদ্র এবং মহেনজাদারোতে উপাসিত পশুপতির একটা ভার্সন হিসেবে। তিব্বতের বৌদ্ধরা আজো রুদ্র চক্রী নামে এক সত্ত্বার উপাসনা করে। Tibetan buddhism এর সাথে তান্ত্রিক buddhism অনেক মিল আছে। তিব্বতী বুদ্ধিযমের কিতাব “কালোচক্র তন্ত্র” অনুযায়ী রুদ্র চক্র হল “বিশ্ব রাজ” যিনি এখন জীবিত হলেও লুকায়িত অবস্থায় আছেন। এবং তার আবির্ভাব ঘটবে শেষ যুগে। তিনি শাম্বালা/আগারথা নামক এক গোপন রাজ্য থেকে বের হয়ে আসবেন।
এই “বিশ্বরাজ” রুদ্র চক্রীর আবির্ভাবের পর কি ঘটবে এই ব্যাপারে কালোচক্র চন্ত্রের বক্তব্য হলঃ বিশ্বরাজ রুদ্রচক্রী আবির্ভূত হবার পর ম্লেচ্ছ ধর্মের অনুসারীদের হত্যা করবেন এবং বিশ্ব শান্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে।”
[“The Chakravartin (i.e. universal ruler) shall come out at the end of the age, from the city the gods fashioned on Mount Kailasa. He shall smite the barbarians in battle with his own four-division army, on the entire surface of the earth.“]
এই ম্লেচ্ছ কারা, সেটা নিয়েও কালা চক্রে বলা আছে। ম্লেচ্ছ হচ্ছে তারাই যারা অনুসরন করে “আদম, নূহ, ইব্রাহীম এবং অপর ৫ জনের – মুসা, ইসা, শ্বেত-পরিহিত জন, মুহাম্মাদ এবং মাহদী।”
Adam (arda), Nuh (nogha),and Ibrahim (vardht) [are the first three barbarian teachers]; there are also five others :Musa (musa),’Isa (i$a), the White-Clad One (tvetavastrin), Muhammad (madhupati), and the Mahdi (mathant),who will be the eighth [ Link ]
দুটা প্রশ্ন এখন মাথায় আসা স্বাভাবিক।
১। লুকিয়ে থাকা এই “বিশ্বরাজ” রুদ্র চক্রী যদি “মাহদী”-র সাথে যুদ্ধ করে তাহলে তার আসল পরিচয় কি?
২। কেন CERN এর যুক্তিবাদী, মুক্তমনা, বিজ্ঞানমনস্ক বিজ্ঞানী এতো গুরুত্বের সাথে, নটরাজ/রুদ্র/শিবের মূর্তি স্থাপন করেছে এবং “গ’ড পারটিকেল” নিয়ে তাদের গবেষনার সাথে নটরাজের ধ্বংস নৃত্যের অনুকরণ করছে?
কেন যে ব্যাপারগুলো নিয়ে আমাদের মাঝারী পর্যায়ের যুক্তিবাদী মুসলিমরা চিন্তা করতে অনীহা প্রকাশ করেন, সেই জিনিষ নিয়ে প্রথম সারির বিজ্ঞানীরা এতো চিন্তা করছে? এক পক্ষ যেরকম আল মাহদীর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সে রকম আরেক পক্ষ কি শীঘ্রই তাদের মিথ্যা রব আল মাসীহ আদ দাজ্জাল-এর আগমন সম্পর্কে আশাবাদী হয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে?