ইউরোপিয়ানরা যখন প্রথমবারের মতো উত্তর অ্যামেরিকাতে (আজকের ইউ.এস.এ) পা রাখলো, ন্যাটিভ অ্যামেরিকানদের ব্যাপারের তাদের প্রথম কথা ছিল – এরা বর্বর।
ইউরোপিয়ানদের চোখে অ্যামেরিকার আদিবাসীরা ছিল বর্বর, কারণ তারা ছিল উলঙ্গ। আদিবাসীরা উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল আর ইউরোপিয়ান মহিলাদের পরনে ছিল তিন স্তরের পোশাক। তাই ইউরোপিয়ানদের কাছে আদিবাসীদের এই নঙ্গতা ছিল বর্বরতা আর পশ্চাৎপদতা।
আজ আমরা নিজেরা উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়াই, আর মুসলিমদের পশ্চাৎপদ বলি, কারণ তাদের নারীরা অনেক বেশি পোশাক পরে। আর একারণে আমরা আজ হিজাব নিষিদ্ধ করি। এর চেয়ে বর্বর কি আর কিছু হতে পারে?
-নরম্যান ফিনকেলস্টাইন
অ্যামেরিকান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, অধ্যাপক, লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট
স্বাধীনতা সবক্ষেত্রে ইতিবাচক না। তাই সীমাহীন স্বাধীনতা কোন বিশ্বাস বা দর্শনই দেয় না। মানুষের বানানো নৈতিকতার মানদন্ডেও স্বাধীনতার সীমারেখা টেনে দেওয়া হয়। “স্বাধীনতা ততোক্ষন ভালো যতোক্ষন সেটা আরেকজনের ক্ষতি না করে”। আবার ক্ষতির সংজ্ঞাও, বর্বরতার সংজ্ঞার মতোই খেয়ালখুশি মাফিক বদলাতে থাকে।
আর ইসলাম বলে সত্ত্বাগতভাবেই মানুষ স্বাধীন হতে পারে না। সে হয় সত্যিকারের রবের, আল্লাহ ‘আযযা ওয়া জাল- এর দাসত্ব করবে, অথবা সে অন্য কিছুর দাসত্ব করবে – সমাজের, সম্পদের, ক্ষমতার, নিজের কামনাবাসনার অথবা কোন মিথ্যে প্রভুর। প্রকৃতিগতভাবে মানুষ নিজেকে উন্মুক্ত করতে চায় না, বরং নিজের শরীরকে ঢেকে রাখতে চায়। পশুর সাথে মানুষের অনেকগুলো পার্থক্যের মধ্যে এটা একটা।
তাই “যেমন খুশি তেমন পোষাক খুলতে বা খোলাতে পারার স্বাধীনতা” (হ্যা, আসলে তর্ক তো এটা নিয়েই তাই না?) নারীর দিক থেকে একটা অস্বাভাবিক এবং পুরুষের দিক থেকে একটা পাশবিক (শাব্দিক অর্থে, পশু সম্পর্কীয়) প্রবণতা। স্বাধীনতার নামে একে মহিমান্বিত করার চেষ্টা মূলত ধূর্ত পুরুষদের কাম-চরিতার্থ করা; চোখ আর দেহের ক্ষুধাকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা।