সক্রিয় মাইনরিটি বনাম নিস্ক্রিয় মেজরিটি


একটা সক্রিয়, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মাইনরিটির তুলনায় নিস্ক্রিয়, আত্মনিমগ্ন মেজরিটি দিনশেষে ইতিহাসের ফুটনোটের চেয়ে বেশি কিছু না। ফুটবল ম্যাচ অনেক সময় কোটি মানুষ একসাথে দেখে। কিন্তু মাঠের ঘটনার ওপর তাদের অনুভূতি, ভালোলাগা, মন্দলাগার বিন্দুমাত্র প্রভাব নেই। তারা নিজেদের যতোই বোদ্ধা, বিদ্বান কিংবা বিশেষজ্ঞ ভাবুক না কেন। খেলার গতি, অবস্থা, ফলাফল নির্ভর করে মাঠে থাকা ২২ জনের ওপর।

‘ইস! ওই ফ্রি কীকটা ঐভাবে নিলে ভালো হতো’ – গ্যালারিতে বসা আমার আপনার এধরনের কথায় মাঠের খেলোয়ার হাসে, তাও ভাগ্য ভালো হলে। সাধারনত সেটাও হয় না, জোটে হাস্যস্পদ হবার চেয়েও খারাপ জিনিস, সম্পূর্ণ উপেক্ষা। এটা স্বাভাবিক। আপনার-আমার কথা ঠিক হতেই পারে, খেলোয়ারদেরও ভুল হতেই পারে, হয়ও। অনেকে থাকে যারা ভুল করাকেই নিজেদের নিয়ম বানিয়ে নেয়, জেনেশুনে ইচ্ছে করে ‘ভুল’ করে। যারা খেলতে নামে তাদের সবাই ভালো খেলোয়ার, কারো কোন সমালোচনা করা যাবে না, এমনো না। অনেক ফালতু লোকও খেলতে নামে, যেমন পল গ্যাসকোয়েন।

কিন্তু ফ্যাক্ট অফ দা ম্যাটার হল তাতে সমীকরণ বদলায় না। যতোক্ষন আপনি-আমি গ্যালারি থেকে বিশ্লেষন দেবো ততোক্ষন ঠাট্টা, অবজ্ঞা কিংবা উপেক্ষাই কপালে জুটবে, ঠিক বলি আর ভুল বলি।

যে অনেক কষ্ট, অধ্যাবসায় আর ত্যাগের পর দলে জায়গা পেয়েছে সে প্রত্যেক শৌখিন দর্শকের কথা শুনবে না। সে জানে হারলে এরা এমনিতেও গালি দেবে, আর জিতলে এরাই পূজা করবে। আর যদি কেউ আসলেই হারজিত নিয়ে কেয়ার করে তবে সে কেবল গ্যালারিতে আরামসে বসে তত্ত্ব কপচাবে না।

মেজরিটি অনেক বিদ্বান হবার পরও ইতিহাসের স্রোতে বারবার অপাংক্তেয় প্রমাণীত হবে। তাদের গুরুত্বপূর্ণ ফিল করার ব্যাপারটা নিজেরা নিজেরা বিশ্লেষণের মধ্যেই। নিস্ক্রিয় সংখ্যাগুরু সক্রিয় সংখ্যালঘুর হাতে জিম্মি। ফর বেটার অর ফর ওয়ার্স।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *