সিরিয়ার একটা স্বেচ্ছাসেবক দল আছে সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স (الخوذ البيضاء ,القبعات البيضاء )। তবে ওয়াইট হেলমেটস, নামেই তাঁরা বেশি পরিচিত। উনারা খুব বেইসিক কিছু সার্ভিস দেন। বোমা হামলার পর আহতদের বিস্ফোরণস্থল থেকে সরানো, হসপিটালে পৌছে দেয়া, বিভিন্ন অবশ্য প্রয়োজনীয় সার্ভিস দেয়া ইত্যাদি। একটা এনজিও যেটা যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলের বিপর্যস্ত মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করে।
কিন্তু এই নিরীহ সংগঠনটাকে সন্ত্রাসী সংগঠন বানানো হয়েছে। রাশিয়ান মিডিয়া (RT, Sputnik ইত্যাদি), ইরানিয়ান মিডিয়া এবং অ্যামেরিকান নব্য নাৎসি অলট-রাইট আন্দোলনের বিভিন্ন ফিগারহেড (সাথে ইউরোপিয়ান নিও-নাৎসিদের কেউ কেউ) – বাশার আল-আসাদের সমর্থকরা সবাই মিলে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে যে এই এনজিওটা আসলে একটা জঙ্গি সংগঠনের অংশ। বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় সাংবাদিকও অংশগ্রহণ করেছে এই প্রপাগ্যান্ডা ক্যাম্পেইনে।
যখন সিরিয়ান এবং রাশিয়ান বিমান সাদা হেলমেটওয়ালাদের টার্গেট করে বোমা ফেলেছে, তখন বিশাল এক দল মানুষ এবং প্রতিষ্ঠান হাজির হয়ে গেছে সেটা জায়েজ করতে। নানান ভুয়া তথ্য আর কন্সপিরেসি থিওরি দিয়ে এরা সবাই মিলে গড়ে তুলেছে বিভিন্ন প্রবন্ধ, ভিডিও, এবং অডিওর এক বিশাল মজুদ। যদিও তথ্যগুলো ভুল, কিন্তু ইন্টারনেটে সিরিয়া নিয়ে জানার চেষ্টা করা অনেক সাধারণ মানুষের সামনে এই তথ্যগুলো যখন উঠে আসছে তখন তারা সত্যমিথ্যের পার্থক্য করতে পারছে না। একসময় এটা চলে এসেছে মেইনস্ট্রিমে। যেমন অ্যামেরিকার পরবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী তুলসি গ্যাবার্ড বিভিন্ন সময় এসব আবর্জনা প্রচার করেছে। সামনে আরও করবে।
প্রিয়া সাহার বক্তব্যের দীর্ঘমেয়াদী ইফেক্ট বোঝার জন্য ওপরের উদাহরণ মাথায় রাখতে পারেন। তথ্য যুদ্ধে (Information Warfare) কে কতোটা সঠিক তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল কার গলা কতোটুকু শোনা যায়। আমরা হাসিঠাট্টা ভালোই করতে পারি। যে অল্প কয়েকটা কাজ আমরা ভালো পারি তার মধ্যে এটা একটা। তবে আমাদের ট্রৌলিং এর ভিডিওগুলো সম্ভবত প্রিয়া সাহাদের সিস্টেম্যাটিক প্রপাগ্যান্ডার বিরুদ্ধে তেমন একটা কার্যকর হবে না। এটা অবশ্য আমার ধারণা। ভুল হতেও পারে।