বাইতিল মাক্বদিস মুক্ত করার আন্দোলন ফেইল করার একটা কারণ হল এটাকে একটা জাতীয়তাবাদী, প্রায় বামঘেঁষা ইস্যু বানিয়ে ফেলা। পশ্চিমা বিশ্বে আজকে যতো ইউনিভার্সিটি অ্যাক্টিভিস্ট, লিবারেল অ্যাক্টিভিস্ট আছে, এদের বড় একটা অংশ, কিংবা বলা যায় অধিকাংশ ‘ফ্রি ফিলিস্তিন’, ‘ভিভা প্যালেস্টিনা’ টাইপ স্লোগান খুব ভালো পায়। বিডিএস (বয়কট, ডাইভেস্ট, স্যাংকশন) আন্দোলনের একদম শুরুর দিকের লোকেদের মধ্যে যাদের সাথে আমার ব্যক্তিগত কথাবার্তা হতো, এরা সবাই ফিলিস্তিনের জন্য ফিদা, কিন্তু সিরিয়া ইস্যুতে এসে এরাই আবার বাশার-ইরান-রাশিয়া অক্ষের হাস্যকর প্রপাগ্যান্ডার পুনরাবৃত্তি করে যায়। বাশার বিরোধিরা নিজেরাই নিজেদের উপর কেমিকাল অ্যাটাক করে – এই ধরণের হাস্যকর কথাবার্তা বিশ্বাস করে।
এই পলিটিকালি কারেক্ট বাম প্রভাবিত অ্যাক্টিভিযম থেকে আলটিমেটলি লাভের লাভ কিছু হয় না, কিন্তু তরুণ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এই লিবারেল ঘেঁষা মেন্টালিটি শেকড় গাড়ে। যেহেতু লিবারেল ইন্টেলেজেন্সিয়া থেকে শুরু করে পশ্চিমা বড় একটা অংশের কাছে তারা নিজেদের ‘সংগ্রামের’ ব্যাপারে সমর্থন পায়, তাই কৃতজ্ঞতা বলুন বা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার অমোঘ নিয়ম বলুন, তাদেরকেও ছাড় দিতে হয় লিবারেলিযমের আদর্শের জায়গাগুলোতে। ফলস্বরূপ, বাইতিল মাক্বদিস মুক্ত করার জন্য যেটা কুফফারের বিরুদ্ধে জিহাদ হবার কথা, সেটা একসময় পরিণত হয় ‘শোষকের বিরুদ্ধে শোষিতের, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অত্যাচারিতের বিপ্লবে’। সালাহ আদ-দ্বীন এর দৃষ্টান্ত বাদ দিয়ে ইহুদিদের মোকাবেলা করা হয় ক্যামেরা নিয়ে ছেলেমেয়ে হাত ধরে ‘দাবকা’ নেচে।
এটা হল লিবারেল, সেক্যুলার ননসেন্সের পেছনে পড়ে সময়, শ্রম আর ঈমান নষ্ট করার রেসাল্ট। এসব পদ্ধতি শুধু মুসলিমদের অধিকার নষ্ট করতে কার্যকর, মুসলিমদের কোন অর্জনে না।
কাশ্মীরের ব্যাপারটাও এভাবে চিন্তা করার একটা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। যালিমের বিরুদ্ধে আমরা মাযলুমের সাথে আছি – টাইপ কথাবার্তা। এসব পলিটিকালি কারেক্ট কথা দিনশেষে ঐ একই ননসেন্স যেটা ফিলিস্তিনিদের সালাহ আদ-দ্বীনের পথ ভুলিয়ে দিয়ে হাস্যকর লিবারেল অ্যাক্টিভিযমের গোলকধাধায় ঢুকিয়েছে। এতো বছর পর, এতো তিক্ত অভিজ্ঞতার পরও যারা এ বাস্তবতাটুকু বুঝে না, তারা আসলে কি বোকা নাকি ইচ্ছে করে সাজা অন্ধ, সেটা এক বিরাট রহস্য।