জাভেদ ভাইয়ের লেখাগুলো আবার পড়ছিলাম…অনেক কিছুই মনে হচ্ছে পড়তে পড়তে। মৃত্যুর খবরটা জানার পর কয়েকজন বারবার বলছিলেন, ভাই আমাদের মাঝে নেই এটা ঠিক বিশ্বাস করতে পারছেন না। পড়তে গিয়ে বারবার একই অনুভূতি হচ্ছে আমারো। আমার অনুভূতির অ্যাপারেটাসে কোন ঝামেলার কারণে হয়তো দু মাস পরে এখন এমন লাগছে।
ভাইয়ের লেখার হাত বেশ ভালো ছিল। চাইলে এখনকার অনেক বেস্টসেলার লেখকের চেয়ে ভালো বই লিখতে পারতেন। কিন্তু খুব বেশি মনোযোগ দেননি।
ফেইসবুকে যারা লেখালেখি করেন, তাদের চিন্তা, লেখালেখিতে পারিপার্শ্বিকতার প্রভাবে খুব বেশি থাকে। সাম্প্রতিক ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা বেশি হয়। নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে ধারাবাহিক লেখা কম হয়। কাজগুলো থেকে যায় এলোমেলো, বিচ্ছিন্ন।
বেশির ভাগ সময় লেখার ম্যাটেরিয়ালের জন্য নির্ভর করা হয় বিভিন্ন লেকচারের ওপর। ‘আন্তর্জাতিক দাওয়াহ ফিল্ডের’ ট্রেন্ডও প্রভাবিত করে। একসময় খুব ‘হার্ট সফটনার’ এর চল ছিল, তখন সেগুলো বেশি হয়েছে, এখন চলছে ‘ক্রিটিকাল থিংকার’ হবার চল। লেখাগুলোতেও পড়ছে সেই ছাপ। লেখার মাধ্যমে নিজেকে জাহির করার প্রবনতাও থাকে আমাদের। এছাড়া ‘বড় সেলিব্রিটি’দের নিজেদের ভুল স্বীকার না করা এবং ‘প্রবলেম্যাটিক’ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা এড়িয়ে যাওয়া অথবা ভুল ব্যাখ্যা প্রচার করার প্রবণতা থাকে। আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়ের লেখাগুলোকে এ বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে মুক্ত মনে হয়েছে।
জাভেদ ভাইয়ের সব লেখালেখির মধ্যে মূল সুরটা ক্রমান্বয়ে নিজেকে বদলানোর, আমার মতে। নিজের চিন্তাকে, জীবনকে প্রতিনিয়ত আরো বেশি করে ইসলামের ছাঁচে সাজানোর। নিছক জানার জন্য জানা না, অনেক কিছু জেনে সেটা নিয়ে জনপ্রিয়, সুলিখিত কিংবা বুদ্ধিদীপ্ত স্ট্যাটাস দেয়া না। মানা। যা জেনেছি, যতোটুকু জেনেছি সেটা নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করা, অন্যকে সেই কল্যাণের দিকে আহবান করা। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গাঢ় করার চেষ্টা করা। অনেক আঁধার পেরিয়ে, আলোতে আসার যে পথ তিনি খুজে পেয়েছেন সে পথকে অন্যদের চিনিয়ে দেয়ার আন্তরিক ইচ্ছা।
আল্লাহ ভাইয়ের কাজগুলো তাঁর জন্য আমলে যারিয়াহ হিসেবে কবুল করুন। তাঁর কবরকে জান্নাতের টুকরো বানিয়ে দিন।
রাহিমাহুল্লাহ।