বিবর্তনবাদের ব্যাপারে একটা অবস্থান বেশ ক’বছর ধরে মুসলিম অ্যাপোলজিস্টদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিমা দা’ঈ এবং অ্যাকাডেমিকদের মধ্যে। অবস্থানটা অনেকটা এরকম–
‘মানুষ ছাড়া অন্য সব প্রাণীর ক্ষেত্রে বিবর্তনবাদের বক্তব্য মুসলিম হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারি। এতে করে কুরআনের সাথে কোন আপাত সংঘর্ষ দেখা দেয় না। তবে মানুষ আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি যা বিবর্তনবাদের মাধ্যমে আসেনি’।
এ অবস্থান অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে কারণ তারা মনে করছেন এতে করে আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে ইসলামের সংঘাতের জায়গা কমানো যায়। নাস্তিকদের সাথে একটা তর্ক কমিয়ে আনা যায় এবং আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে ইসলামের অবস্থানের সংঘর্ষের কারণে যেসব মুসলিম সংশয়ে পড়ে, তাদের ঈমানকে মজবুত করা যায়।
কিন্তু এই অ্যাপ্রোচ এবং ধারণা মিসগাইডেড। দিন শেষে এটা ইসলামের অবস্থানকে দুর্বল করে। ওয়ার্ল্ডভিউ এবং জ্ঞানতত্ত্ব (Epistemology) হিসেবে ইসলামকে অধীনস্ত করে সায়েন্টিসম এবং সায়েন্টিফিক ম্যাটেরিয়ালিসমের। এ অবস্থান বিশ্বাসের সংকটের সমাধান দিতে পারে না, বরং তৈরি করে আরো বড় সংকট।
কথাগুলো ব্যাখ্যা করা যাক।
বিবর্তনবাদের আলোচনার বিষয় মানুষ এবং প্রাণের উৎস। প্রাণ কী? মানুষ কী? এগুলো কোথা থেকে আসলো? কীভাবে আসলো? এ প্রশ্নগুলো বিচ্ছিন্নভাবে দেখা সম্ভব না। প্রশ্নগুলোর কোন উত্তর দিতে গেলেই কিছু পূর্বধারণা আপনাকে গ্রহণ করতে হবে। যখনই প্রশ্নগুলোর কোন উত্তর ঠিক করে ফেলবেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু অনুসিদ্ধান্ত এবং উপসংহার চলে আসবে। অর্থাৎ মানুষ এবং প্রাণের উৎস সংক্রান্ত প্রশ্নগুলোর ব্যাপারে যে কোন উত্তর একটা সূক্ষ্ম এবং জটিল কাঠামোর ভেতরে অবস্থান করে যেটাকে আমরা ওয়ার্ল্ডভিউ বলতে পারি। এই কাঠামো এক পরস্পর সংযুক্ত সম্পূর্ণতা, যা থেকে কোনো একটি অংশকে বিচ্ছিন্ন করে স্বতন্ত্রভাবে গ্রহণ বা বর্জনের সুযোগ নেই। মাঝখান থেকে কিছু গ্রহণ করা হলে অটোম্যাটিক এর সাথে যুক্ত অনেক অংশ চলে আসবে। এক সুতো টানলে দেখতে পাবেন অসংখ্য অদৃশ্য আঁশ আর সংযুক্তির জালের মাধ্যমে বাকি অংশের সাথে তা যুক্ত।
প্রাণ ও মানুষের উৎস সম্পর্কে যখন কোন অবস্থান গ্রহণ করা হবে তখন পূর্বধারণা হিসেবে নির্দিষ্ট কোন অন্টোলজি (Ontology) এবং এপিস্টেমোলজি (Epistemology) গ্রহণ করতে হবে। আর এর ফলে টিলিওলজি (Teleology) এবং মরালিটির (Morality) ব্যাপারে কিছু নির্দিষ্ট অনুসিদ্ধান্ত এবং উপসংহার চলে আসবে। কিছু শক্ত শক্ত শব্দ চলে এসেছে, আমি জানি। কিন্তু শব্দগুলো শুনতে কঠিন শোনালেও এগুলোর পেছনের অর্থগুলো বোঝা সহজ।
অন্টোলজি (বাংলায় পরাবিদ্যা বা তত্ত্ববিদ্যা) বাস্তবতার প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করে। কী আছে, কী নেই? কোনটা বাস্তব, কোনটা অবাস্তব? অস্তিত্বশীল কী? অস্তিত্বশীল হবার অর্থ কী? বস্তু কী? সত্তা কী?- এ প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করে অন্টোলজি। এ ক্ষেত্রে দৃশ্যমান জগতের ব্যাপারে আধুনিক বিজ্ঞান এবং ইসলামের অবস্থান মোটামুটি কাছাকাছি হলেও এমন অনেক কিছু আছে যেগুলোর ব্যাপারে ইসলাম এবং আধুনিক বিজ্ঞানের অন্টোলজি সাংঘর্ষিক। রূহ, মালাইকা, জ্বিন, বারযাখ, জান্নাত-জাহান্নাম–এর কোন কিছুকেই আধুনিক বিজ্ঞান তথা সায়েন্টিফিক ম্যাটেরিয়ালিসম মেনে নেয় না। আবার এর কোন কিছু অস্বীকার করে মুসলিম থাকা সম্ভব না।
একই কথা এপিস্টেমোলজির (বাংলায় জ্ঞানতত্ত্ব) ক্ষেত্রেও সত্য। জ্ঞান, মানবীয় জ্ঞানের প্রকৃতি, উৎস ও সীমানা হল এপিস্টেমোলজির জায়গা। জ্ঞান কী? জানার অর্থ কী? জ্ঞানের উৎসগুলো কী? জ্ঞান অর্জনের পথ কী? জ্ঞানের সাথে ধারণা, দাবি, কুসংস্কার কিংবা ব্যক্তিগত মতের পার্থক্য কী–এ ধরনের প্রশ্নগুলো নিয়ে এপিস্টেমোলজির আলোচনা। ইসলাম মানবীয় যুক্তি, চিন্তা এবং বিজ্ঞানকে জ্ঞানের উৎস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু ইসলামের অবস্থান হলো চূড়ান্ত এবং সুনিশ্চিত জ্ঞানের উৎস একটিই–ওয়াহি। অন্যদিকে সায়েন্টিফিক ম্যাটেরিয়ালিসম – রিসালাত এবং ওয়াহিকে অস্বীকার করে।
বিবর্তনবাদের আলোচনায় এ কথাগুলো আনার প্রাসঙ্গিকতা কী? প্রাসঙ্গিকতা হল, মানুষ এবং প্রাণের উৎস কী? – এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে আমাকে কোন না কোন নির্দিষ্ট অন্টোলজিকাল এবং এপিস্টেমোলজিকাল অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। বিবর্তনবাদ এই ক্ষেত্রে সায়েন্টিফিক ম্যাটেরিয়ালিসম এবং এম্পিরিসিসমকে গ্রহণ করে। যা আবশ্যকভাবে তাওহিদ, রিসালাত এবং ওয়াহিকে নাকচ করে কিংবা অপ্রাসঙ্গিক সাব্যস্ত করে।
একইভাবে বিবর্তনবাদকে গ্রহণ করলে মানুষের অস্তিত্বের উদ্দেশ্য ও গন্তব্য (Teleology) সম্পর্কে কিছু নির্দিষ্ট অনুসিদ্ধান্ত ও উপসংহার চলে আসে। প্রাণ যদি এলোমেলো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার অংশ হয়, তাহলে নিশ্চয় প্রাণের কোন উচ্চতর উদ্দেশ্য কিংবা গভীর অর্থ থাকতে পারে না। প্রাণ কেবল একটা ব্রুট ফ্যাক্ট। মহাজাগতিক দুর্ঘটনায় এই নীল পাথরের টুকরোতে কিছু প্রাণের উৎপত্তি হয়েছে। ব্যস! এর আর কোন তাৎপর্য নেই। মাহাত্ম্য নেই। একইভাবে নৈতিকতারও বিশেষ কোন গুরুত্ব নেই। বিবর্তনের দৃষ্টিকোণ থেকে নৈতিকতা হল একটা প্রজাতির জীবের খেয়াল ও স্বার্থমাফিক বানানো কিছু নিয়ম কেবল। আবারও, এই অনুসিদ্ধান্ত এবং উপসংহারগুলো ইসলামের অবস্থানের সাথে সাংঘর্ষিক। আল্লাহ আমাদের জানিয়েছেন সৃষ্টির মধ্যে মানুষের বিশেষ সম্মান আছে। তার অস্তিত্বের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য আছে এবং নৈতিকতা মালিকুল মুলক আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
কাজেই বিবর্তনবাদকে আংশিকভাবে গ্রহণ করতে গেলেও অন্টোলজি, এপিস্টেমোলজি, টিলিওলজি এবং মরালিটির ব্যাপারে কিছু নির্দিষ্ট অবস্থান চলে আসে। বিবর্তনবাদকে তাই দেখতে হবে কম্প্রিহেনসিভভাবে। এর সাথে সংযুক্ত ওয়ার্ল্ডভিউ থেকে আলাদা করে বিবর্তনবাদকে দেখা সম্ভব না। আপনি যখন বিবর্তনবাদকে গ্রহণ করবেন তখন বুঝে কিংবা না বুঝে তার প্যারাডাইমকেও আপনি গ্রহণ করছেন। গাছ নেবেন কিন্তু শেকড় নেবেন না – এটা হবে না। এ বিষয়টা নাস্তিকরাও বোঝে। রিচার্ড ডকিন্সের মতো নাস্তিকরা বলে ডারউইনের আগে ইন্টেলেকচুয়ালি ফুলফিলিং নাস্তিক হওয়া কঠিন ছিল, কারণ তারা বোঝে বিবর্তনবাদ তার সাথে করে কোন কোন পূর্বধারণা এবং উপসংহারগুলো নিয়ে এসেছে।
আমাদের এটাও বোঝা উচিৎ যে পপ কালচারে কিংবা নাস্তিকদের মুখে যখন ‘বিবর্তন’ শব্দটা উচ্চারিত হয় তখন সেটা আসলে কী বোঝায়। বিবর্তন বলতে কেউ নিছক ‘সময়ের সাথে পরিবর্তন’ বোঝায় না। অ্যাডাপটেইশান বোঝায় না। ঠিক যেমন ইসলাম বলতে কেউ নিছক ‘সালাত’ বোঝায় না। ক্রিশ্চিয়ানিটি বলতে ‘থ্যাঙ্কসগিভিং’ বোঝায় না। যখন বিবর্তনের কথা বলা হয় তখন জড় বস্তু থেকে জীবনের সূচনা, এক ধরণের প্রাণী থেকে আরেক ধরণের প্রাণী আসা, জীবন, কনশাসনেস এবং বায়োলজিকাল ইনফরমেইশান এলোমেলো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ফলাফল হওয়াসহ সম্পূর্ণ বিশ্বাসটাকে বোঝানো হয়। বিবর্তনবাদ হল সেক্যুলারিসমের সৃষ্টিতত্ত্ব কিংবা জেনেসিস স্টোরি। এই সৃষ্টিতত্ত্বকে গ্রহণ করার গভীর ও সুদূরপ্রসারী তাৎপর্য আছে।
আমরা যখন মানুষ ছাড়া অন্য সব প্রাণীর ব্যাপারে বিবর্তনবাদ মেনে নেয়ার কথা বলছি, তখন আমরা কিন্তু এই ওয়ার্ল্ডভিউয়ের মৌলিক অবস্থানগুলো স্বীকার করে নিচ্ছি। একইভাবে বিবর্তনবাদের ব্যাপারে সবচেয়ে শক্তিশালী যে আপত্তিগুলো আছে, আমি সেগুলোকেও বাদ দিয়ে দিচ্ছি। অথচ বিবর্তনবাদ এখনো তার সব মৌলিক দাবি অকাট্যভাবে প্রমাণ করতে পারেনি। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্বের ব্যাপারে বিভিন্ন হাইপোথিসিস আছে। সেগুলো কেন আমরা গ্রহণ করার প্রস্তাব করছি না?
যেমন একটা হাইপোথিসিস হল জীবনের বীজ এসেছে পৃথিবী কিংবা সৌর জগতের বাইরে থেকে । হয়তো কোন ধূমকেতুর মাধ্যমে অথবা কোন অ্যালিয়েনের হাত ধরে। এই হাইপোথিসিসের নাম প্যান্সপারমিয়া (Panspermia)। কেউ হয়তো বলতে পারে, আপাতভাবে মানুষ ছাড়া অন্য সব প্রাণীর ব্যাপারে প্যান্সপারমিয়া তত্ত্ব মেনে নেয়ার সাথে কুরআনের কোন সংঘর্ষ নেই। কিন্তু আমরা মুসলিম অ্যাপোলজিস্টদের প্যান্সপারমিয়া তত্ত্ব গ্রহণ করতে দেখি না। অথবা ইন্টেলিজেন্ট ডিসাইন হাইপোথিসিস গ্রহণ করতে দেখি না। বিবর্তনবাদের হাইপোথিসিস গ্রহণ করতে দেখি। কেন? কারণ ডমিন্যান্ট ন্যারেটিভ বিবর্তনের পক্ষে। কাজেই বিবর্তন আংশিক গ্রহণ করার বিষয়টা আসছে কর্তৃত্বশালী বয়ানের চাপ থেকে। কুরআনের ভিত্তিতে করা স্বাধীন ইলমী গবেষণা থেকে না। সহজ ভাষায় বললে, একটা নির্দিষ্ট উত্তরকে সঠিক ধরে নিয়ে সেটার সাপেক্ষে ওয়াহির বক্তব্য ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিবর্তনবাদকে মানুষ ছাড়া অন্য সব প্রাণীর ব্যাপারে গ্রহণ করার অবস্থানকে ‘কুরআনের সাথে আপাতভাবে সাংঘর্ষিক না, তাই গ্রহণ করছি’, এ কথা দিয়ে সমর্থন করা অত্যন্ত রিডাকটিভ একটা অ্যাপ্রোচ (দুঃখিত reductive শব্দের যুতসই বাংলা প্রতিশব্দ মাথায় আসছে না)।
বিবর্তনবাদকে আংশিক গ্রহণ করার আরেকটা সমস্যা হল, এই অবস্থান দীর্ঘমেয়াদে টেকসই না। মানুষ ছাড়া অন্য সব প্রাণীর ব্যাপারে বিবর্তনবাদের বক্তব্য মেনে নিয়ে আমি অলরেডি এ ওয়ার্ল্ডভিউর সবচেয়ে মৌলিক দাবিগুলো গ্রহণ করে ফেলেছি। এখন শুধু মানুষের ক্ষেত্রে একে অস্বীকার করা একেবারেই আরবিট্রারি। একদিকে এটা সেক্যুলার অবস্থান থেকে অযৌক্তিক। অন্যদিকে এই অবস্থান ইসলামের অবস্থান থেকে অনাকাঙ্খিত কারণ ইসলামের অন্টোলজি এবং এপিস্টেমোলজিকে আমি সায়েন্টিফিক ম্যাটেরিয়ালিসমের অধীনস্ত করছি।
বিবর্তনবাদের পক্ষে প্রমাণ যদি অকাট্য না হয় তাহলে কেন আমরা একে আংশিকভাবে গ্রহণ করবো? বিবর্তনবাদের পক্ষে প্রমাণ যদি অকাট্য হয় তাহলে মানুষের ক্ষেত্রে বিবর্তনবাদের প্রমাণ এবং বক্তব্যগুলো গ্রহণ না করার যুক্তি কী? যৌক্তিক বিচারে এটা একটা জোড়াতালির অবস্থান যা দীর্ঘমেয়াদে ধরে রাখা সম্ভব না। আমরা কেন এমন অসংলগ্ন একটা অবস্থান গ্রহণ করতে যাবো?
দীর্ঘমেয়াদে অবধারিতভাবে এ ধরণের অবস্থান বিবর্তনবাদকে সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করার দিকে নিয়ে যাবে। এবং সেটাকে জায়েজ করার জন্য কুরআন-সুন্নাহর অবস্থানকে বিকৃত করবে। যেমন অ্যামেরিকার মডার্নিস্ট প্রতিষ্ঠান ইয়াক্বীন ইনস্টিটিউটের এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে – এমন হতে পারে যে আজকের হোমোস্যাপিয়েন্স প্রজাতির একটা নির্দিষ্ট অংশ হল আদম আলাইহিস সালাম-এর সন্তানেরা-বনী আদম। কিন্তু হোমো স্যাপিয়েন্স প্রজাতির মধ্যে এমন অংশ থাকতে পারে যারা বনী-আদম না। বরং তাদের উদ্ভব অন্য কোন বানরজাতীয় (ape-like) প্রাণী থেকে। অন্যান্য প্রাণীদের মতোই বিবর্তনবাদের প্রক্রিয়ায় তারা এসেছে। লেখক দাবি করেছে, এই অবস্থান কুরআনের সাথে আপাতভাবে সাংঘর্ষিক না!
এই ধরণের অবস্থান কেবল শুরু, এ ধরণের তত্ত্ব আগামীতে আরো আসতে থাকবে। কারণ বিবর্তনের প্যারাডাইমকে গ্রহণ করে নিয়ে তারা এর মধ্যে ইসলামকে খাপ খাওয়াতে চাচ্ছে। বিবর্তনবাদের ফুল প্যাকেজ তাই মুসলিদের আকীদাহর জন্য বিপজ্জনক। এছাড়া বিবর্তনবাদের মৌলিক দাবিগুলোর অনেকগুলো এখনো অপ্রমাণিত। বিবর্তনবাদকে আধুনিক পৃথিবীতে একটা ডগমার মতো ধারণ করা হয়। এর বিরুদ্ধে উত্থাপিত বক্তব্যগুলো মেইনস্ট্রিম সায়েন্টিফিক এস্টাবলিশমেন্ট স্রেফ উপেক্ষা করে যায়। যারাই এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তাদের অনেকটা এক ঘরে করা হয়।
কাজেই এ আলোচনা করার জন্য শুধু বিবর্তনবাদের পক্ষে বিপক্ষে প্রমাণ জানা যথেষ্ট না। ফিলোসফি অফ সায়েন্স সম্পর্কে নিদেনপক্ষে প্রাথমিক পর্যায়ের কিছু পড়াশোনা করাও আবশ্যক। এক্ষেত্রে থমাস কুহনের ‘দা স্ট্রাকচার অফ সায়েন্টিফিক রেভ্যুলুশান্স’, পল ফায়রাব্যান্ডের ‘অ্যাগেইন্সট মেথড’ এবং হেনরি বাওয়ারের ‘সায়েন্টিফিক লিটারেসি অ্যান্ড দা মিথ অফ সায়েন্টিফিক মেথড’ বইটি আমি সাজেস্ট করবো। এছাড়া ড্যানিয়েল হাক্বিকাতযুর ‘সংশয়বাদী’ বইটির বিজ্ঞানবাদ সম্পর্কিত অধ্যায় ইসলাম ও আধুনিক বিজ্ঞানের সম্পর্ককে বোঝার জন্য উপকারী হবে বলে আমি মনে করি। ডারউইনিসম এবং বিবর্তনবাদের ব্যাপারে ড. ইয়াদ আল কুনাইবির আলোচনাও আমি স্ট্রংলি সাজেস্ট করবো। লিঙ্ক কমেন্টে।
দিনশেষে বিবর্তনবাদকে গ্রহণ করা বা না করার বিষয়টা ওয়ার্ল্ডভিউয়ের সাথে যুক্ত। প্যারাডাইমের সাথে যুক্ত। এটা নিছক ফসিল থেকে উপসংহার টানা কিংবা নাস্তিকদের সাথে তর্ক করার বিষয় না। মুসলিমদের মধ্যে যারা এ বিষয়ে পাবলিকলি আলোচনা করতে চান তাদের এই দিকগুলো বোঝা জরুরী।
ড. ইয়াদ আল কুনাইবি হাফিযাহুল্লাহ (পিএইচডি ফার্মাকোলজি), মূল সিরিয বিশ্বাস, নাস্তিকতা এবং প্রাসঙ্গিক অন্যন্য বিষয় নিয়ে। বেশ কিছু পর্ব ডারউইনিসম এবং বিবর্তনবাদ নিয়ে –