১.
নন-প্র্যাকটিসিং ইহুদি পরিবারে জন্ম নেওয়া হাঙ্গেরিয়ান-অ্যামেরিকান পলিম্যাথ জন ভন নিউম্যান ছিলেন একজন অ্যাগনস্টিক। কিন্তু প্যানক্রিয়েটিক ক্যান্সারে ভুগতে থাকা ভন নিউম্যান মৃত্যুর কিছুদিন আগে সিদ্ধান্ত নেন একজন ক্যাথলিক পাদ্রিকে ডেকে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহন করার। স্বাভাবিকভাবেই ভন নিউম্যানের সিদ্ধান্ত তার পরিবার ও বন্ধুদের অবাক করে। আজীবন লালিত অজ্ঞেয়বাদকে বাদ দিয়ে বিশ্বাসকে গ্রহন করার কারন সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে ভন নিউম্যান জবাব দেন – Pascal had a point [“প্যাসকেলের কথায় যুক্তি ছিল।“]
ভন নিউম্যান এখানে ফরাসী গণিতবিদ, দার্শনিক এবং পদার্থবিজ্ঞানী ব্লেইয প্যাসকালের বিখ্যাত “বাজির” কথা বলছেন। Pascal’s Wager নামে খ্যাত এই যুক্তির মূল বক্তব্য হল-
যেহেতু কোন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে স্রষ্টার অস্তিত্ব কিংবা অনস্তিত্ব নিশ্চিত ভাবে প্রমান করা সম্ভব না, তাই স্রষ্টায় বিশ্বাসের ক্ষেত্রে প্রতিটি মানুষ এক অর্থে একটি বাজিতে অংশগ্রহন করে। কেউ বেছে নেবে স্রষ্টা আছেন। কেউ বেছে নেবে স্রষ্টা নেই। গাণিতিক ভাবে এক্ষেত্রে যেকোন মানুষের সঠিক বা ভুল হবার সম্ভাবনা হল ১/২।
ব্যাপারটা অনেকটা কয়েন দিয়ে টস করার মতো। হেড বা টেইলস (আমরা ক্রিকেট খেলার সময় বলতাম “শাপলা” আর “ফলমূল”) আপনি কয়েনের যেকোন একটি দিক বেছে নেবেন। আপনার জেতার সম্ভাবনা থাকবে ১/২।
এখন দেখা যাক সম্ভাব্য এই দুটি ফলাফলের ক্ষেত্রে লাভ ও ক্ষতি কি রকম।
স্রষ্টা আছেনঃ বিশ্বাসীরা দুনিয়াতে স্রষ্টার আদেশ-নিষেধ মেনে চলার কারনে অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হবে। অর্থাৎ তাদের কিছু পরিমাণ আনন্দ, বিনোদন এবং সুখ পরিত্যাগ দিতে হবে। এটাকে আমরা ক্ষতি হিসেবে ধরবো। তবে যেহেতু আমরা জানি দুনিয়ার জীবন সীমিত। তাই বিশ্বাসীদের এই ক্ষতি হবে সীমিত। আর এই সীমিত ক্ষতির পরিবর্তে বিশ্বাসীর মৃত্যুর পর পাবে অসীম সময় ধরে পুরস্কার। যেহেতু আখিরাতের জীবন অসীম।
অন্যদিকে অবিশ্বাসী দুনিয়াতে স্রষ্টার বাধানিষেধ না মেনে ইচ্ছেমতো যেকোন কিছু করার কারনে সীমিত পরিমাণ লাভ পাবে। কিন্তু মৃত্যুর পর তাকে অসীম সময় ধরে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
অর্থাৎ যদি স্রষ্টা থাকেন, তাহলে সীমিত ক্ষতির বিনিময়ে বিশ্বাসী পাবে অসীম লাভ। আর সীমিত লাভের বিনিময়ে অবিশ্বাসী পাবে অসীম ক্ষতি।
স্রষ্টা নেইঃ যেহেতু মৃত্যুর পর আর কোন কিছু নেই এবং দুনিয়ার জীবনই সব তাই আদেশ-নিষেধ মেনে চলার কারনে বিশ্বাসীদের দুনিয়ার সীমিত জীবনে সীমিত পরিমাণ ক্ষতি হবে। আর বাধানিষেধ না মেনে ইচ্ছেমতো যেকোন কিছু করার কারনে দুনিয়ার জীবনে অবিশ্বাসীরা সীমিত পরিমাণ লাভ করবে।
সুতরাং একজন বিশ্বাসীর জন্য এই বাজিতে সম্ভাব্য ফলাফলের সেট দুটো – (সীমিত সময় জুড়ে ক্ষতি, তারপর অসীম সময় জুড়ে পুরস্কার) অথবা (সীমিত সময় জুড়ে ক্ষতি, তারপর শুন্যতা)।
একজন অবিশ্বাসীর জন্যও সম্ভাব্য ফলাফল দুটো – (সীমিত সময় জুড়ে লাভ, তারপর অসীম সময় জুড়ে শাস্তি) অথবা (সীমিত সময় জুড়ে লাভ, তারপর শুন্যতা)।
সুতরাং যদি স্রষ্টা না থাকে তাহলে বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসী দুজনের জন্যই মৃত্যুর পর ফলাফল এক। শুন্যতা। কিন্তু যদি স্রষ্টা থাকেন তাহলে বিশ্বাসীর পুরস্কার অসীম, অন্যদিকে অবিশ্বাসীর শাস্তি অসীম। তাই বাজি বা কয়েন টসের সময় একজন বুদ্ধিমান মানুষ বুঝতে পারবে তাকে মূলত সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে সীমিত আর অসীমের মধ্যে। প্যাসকেলের বক্তব্য হল সীমিত লাভের সম্ভাবনার জন্য অসীম সময়জুড়ে শাস্তির ঝুঁকি নেওয়া অযৌক্তিক। এ কারনে সম্ভাব্য ফলাফলের বিবেচনায় গাণিতিক ও যৌক্তিকভাবে “স্রষ্টা আছেন” এই অবস্থান নেওয়াই অধিকতর নিরাপদ।
প্যাসকেলের প্রায় ৬০০ বছর আগে মুসলিম কালামশাস্ত্রবিদ জিয়াউদ্দিন আব্দুল মালিক আল-জুয়াইনি একই ধরনের যুক্তির ব্যবহার করেছিলেন। এছাড়া আমাদের দেশের ডঃ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহর ক্ষেত্রে একটি প্রসিদ্ধ ঘটনার কথা শোনা যায় যেখানে মূলত এই যুক্তিরই একটি ব্যবহৃত হয়েছে।
একজন নাস্তিক ডঃ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহকে প্রশ্ন করলোঃ আপনি যে অতো ধর্ম-কর্ম করেন এতো বিধিনিষেধ মানেন। যদি মরার পর দেখেন আল্লাহ নাই, তাহলে কেমন হবে? এসবই কি তাহলে লস না?
ডঃ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ জবাবে বললেনঃ যদি তুমি মরার পর দেখো আল্লাহ আছেন তাহলে তোমার যা হবে তার তুলনায় আমার লস কিছু না।
তাই প্যানক্রিয়েটিক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষারত ভন নিউম্যান ঠিক কোন অবস্থান থেকে বলেছিলেন – Pascal had a point – তা বোধগম্য। একজন মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে একটি ওষুধের কথা বলা হলো যেটা খেলে ৫০% সম্ভাবনা হল মারা যাবার আর ৫০% সম্ভাবনা হল সম্পূর্ণভাবে আরোগ্য লাভের। এক্ষেত্রে ওষুধটি খেলে রোগীটির হারানো কিছু থাকে না কিন্তু পাবার সব কিছুই থাকে। এই সহজ সমীকরণ ভন নিউম্যানের মিস করার কথা না।
প্যাসকেলের বাজি স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে যুক্তি না। তবে নিঃসন্দেহে নাস্তিকরা বিশ্বাসীদের অবস্থানকে অযৌক্তিক বলে যে দাবি করে তার বিরুদ্ধে সহজবোধ্য এবং শক্তিশালী জবাব। আর একই সাথে নাস্তিকতার অবস্থানের যৌক্তিকতার ব্যাপারেও একটি বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন।
২.
১৯৫৩ সালে Look ম্যাগাযিনের একটি সাক্ষাৎকারে বিখ্যাত নাস্তিক বার্ট্রান্ড রাসেলকে প্রশ্ন করা হয়েছিল – ঠিক কি ধরনের প্রমান পেলে আপনি বিশ্বাস করবেন স্রষ্টা আছেন?
জবাবে রাসেল বলেছিলঃ যদি আমি আকাশ থেকে স্রষ্টার গায়েবি কন্ঠ শুনতে পাই, আর যদি এই কন্ঠ আগামী ২৪ ঘন্টায় আমার সাথে কি কি ঘটবে তা হুবহু ভবিষ্যৎবাণী করতে পারে। তাহলে আমি বিশ্বাস করবো স্রষ্টা আছেন।
বলাবাহুল্য আস্তিক বা নাস্তিক কেউই বিশ্বাস করে না যে প্রতিটি ব্যক্তির সাথে স্রষ্টা এই ভাবে কথোপকথন করবেন এবং স্বীয় অস্তিত্বের প্রমান দেবেন।
রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন মক্কার মুশরিকদের কাছে তাওহিদের দাওয়াত দিচ্ছিলেন তখনো তাদের অনেকেই রাসেলের মতোই দাবি করেছিল।
“কেন একজন ফেরেশতা আমাদের চোখের সামনে আসমান থেকে নেমে আসে না?” “কেন আমাদের চোখের সামনে আসমান থেকে একটি কিতাব নেমে আসে না?” “কেন তোমার রব আসমান থেকে একটি সিঁড়ি নামিয়ে দেন না, আর তুমি সেই সিঁড়ি দিয়ে আসমানে উঠে যাও না?” ইত্যাদি ইত্যাদি।
তবে এটা অবিশ্বাসীদের অবস্থানের ব্যাপারে একটা ধারণা দেয়। যদিও অনেক কিছুই তারা চাক্ষুস প্রমান ছাড়াই বিশ্বাস করে, কিন্তু স্রষ্টার ক্ষেত্রে তারা চাক্ষুস প্রমান চায়। মিরাকল বা কেরামতপূর্ণ ঘটনা দেখতে চায়। এক্ষেত্রে আরো একটি কথাও বলা যায়। যদি নাস্তিকরা স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসের ক্ষেত্রে এতো মোটা দাগের প্রমান দাবি করে, তাহলে ইনসাফ হল স্রষ্টার অনস্তিত্বের ব্যাপারের তাদের দাবি প্রমান করার জন্য তারা একই ধরনের মোটা দাগের কোন প্রমান উপস্থাপন আবশ্যক। যদিও অতি সুক্ষ দাগের কোন ইতিবাচক প্রমানও (Positive proof) নাস্তিকরা আজো উপস্থাপন করতে পারে নি।
৩.
ভন নিউম্যান এবং রাসেলের এ দুটো ঘটনা থেকে মূলত যা প্রমান হয় তা হল শেষ পর্যন্ত স্রষ্টার ব্যাপারে অবস্থান – সেটা আস্তিকতা হোক বা নাস্তিকতা হোক – একটা দার্শনিক বা দর্শনগত অবস্থান। এটা কোন বৈজ্ঞানিক অবস্থান না। কারন আমাদের বিজ্ঞান দিয়ে স্রষ্টার অস্তিত্ব কিংবা অনস্তিত্ব প্রমান করা সম্ভব না।
একজন মানুষ এই দুটো অবস্থানের কোনটি গ্রহন করছে সেটা থেকে বুদ্ধিমত্তা বা জ্ঞান সম্পর্কেও (পার্থিব বিচারে) কোন ধারণা করা যায় না। ভন নিউম্যান, কিংবা প্যাসকেল নিশ্চিত ভাবেই অশিক্ষিত, মূর্খ ব্যক্তি ছিলেন না। তারা যুক্তি, বিজ্ঞান বুঝতেন না এমন দাবি করার চিন্তা করাটাও হাস্যকর। অন্যদিকে ম্যাথমেটিশিয়ান এবং দার্শনিক রাসেলকেও পার্থিব বিচারের মূর্খ আহাম্মক বলা যায় না।
স্রষ্টায় বিশ্বাস ও তাঁর আনুগত্যের ব্যাপারে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় নিজ বিচার, বিবেচনা ও বোধবুদ্ধির আলোকে। আর আধুনিক মিলিট্যান্ট বা নিউ অ্যাইথিস্টরা যতোই চিৎকার চেচামেচি করুক না কেন বিজ্ঞান এই ক্ষেত্রে কোন সিদ্ধান্ত দিতে সক্ষম না। সুতরাং যারাই শুধুমাত্র বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে আস্তিকতা কিংবা নাস্তিকতাকে সঠিক প্রমান করতে চান তারা দুইদলই একটি মৌলিক ভুল করেন। বিজ্ঞান শুধু কিছু পর্যবেক্ষণকে আপনার সামনে তুলে ধরতে পারে যা স্রষ্টার অস্তিত্ব কিংবা অনস্তিত্বের প্রশ্নের ব্যাপারে নিউট্রাল বা নিরপেক্ষ। আস্তিক আর নাস্তিকরা এই পর্যবেক্ষনগুলোকে নিজ অবস্থানের পক্ষে ব্যবহার করে। কিন্তু তারা যে উপসংহার উপস্থাপন করে তা তাদের নিজ নিজ ব্যাখ্যা; বিজ্ঞান না।
নাস্তিকরা এই ভুলটা অনেক সময়ই ইচ্ছাকৃতভাবেই করে, কারন দর্শনের দিক থেকে নাস্তিকতার দাবি প্রমানের ক্ষেত্রে কোন ইতিবাচক প্রমান বা যুক্তি উপস্থাপন করতে দশকের পর দশক ধরে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তাই তাদের জন্য বিজ্ঞানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা, বিজ্ঞানমনস্কতার ভান করাটাই লাভজনক।
আর আস্তিকদের একটা বড় অংশ একই ভুল করে নাস্তিকদের এই আপাত বিজ্ঞানমনস্কতার প্রতিক্রিয়া হিসেবে। নাস্তিকদের জবাব দেয়ার জন্য বিজ্ঞান ব্যবহার করা থেকে শুরু হলেও অনেকেই এই অবস্থানে চলে যান যেখানে তারা বিশ্বাসকে বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা চেষ্টা করেন। আর এটিও বিশ্বাস এবং যুক্তি – উভয় দৃষ্টিকোন থেকেই ভুল।
৪.
তাহলে উপায় কি? এই বিতর্কের মীমাংসা হবে কি করে?
একজন মুসলিম আপনাকে বলবে এর মীমাংসা হবে মৃত্যুর পর।
“…অনন্তর আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন; তখন আমি তোমাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেব যে বিষয়ে তোমরা মতভেদ করছ” [আলে ইমরান, ৫৫]
কিন্তু একজন নাস্তিক কি বলবে? বার্ট্রান্ড রাসেল কিংবা মক্কার কুরাইশরা যেরকমের মিরাকল দাবি করেছে সেগুলোর অবর্তমানে নাস্তিকতার দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে, শুধু একটি জিনিসই এ বিতর্কের মীমাংসা করতে পারে। আর তা হল মৃত্যু পরবর্তী অভিজ্ঞতার মাধ্যমে প্রমান, যাকে অনেকে এস্ক্যাটোলজিকাল ভেরিফিকেশান (Eschatological Verification) বলে থাকেন।
সেক্ষেত্রে যদি মৃত্যু পরবর্তী সম্ভাবনা হয়ঃ ১) স্রষ্টা তথা পরকাল/আখিরাত এবং ২) কোন চেতনা, কোন কিছুর অস্তিত্ব না থাকা; শুন্যতা (Oblivion),
তাহলে যদি #১ সত্য হয় তাহলে বিশ্বাসীরা সঠিক প্রমাণিত হবে। আর যদি #২ সত্য হয় তাহলে নাস্তিকরা সঠিক প্রমাণিত হবে।
মজার ব্যাপারটা হল যদি সম্ভাব্য ফলাফল এই দুটোই হয় তাহলে আমরা নিশ্চিত ভাবে যা বলতে পারি তা হলঃ
১) বিশ্বাসীরা যদি ভুলও হয় তবুও তারা কখনোই জানতে পারবে না যে তারা ভুল।
২) নাস্তিকরা যদি ঠিকও হয় তবুও তারা কখনোই জানতে পারবে না যে তারা ঠিক। [১]
সুতরাং বিজ্ঞানের দিক থেকে এবং দর্শনের দিক থেকে নাস্তিকতাকে প্রমান করা অথবা ভেরিফাই করা অসম্ভব। আমাদের দেশীয় অধিকাংশ নাস্তিক – যারা মুক্তমনা জাতীয় ব্লগ, আরজ আলী মাতব্বর-হুমায়ুন আজাদের বই পড়ে এবং ডকিন্স-ক্রাউস-হ্যারিসদের বই/ভিডিও থেকে ধরাবাঁধা যুক্তি মুখস্থ করে বিজ্ঞানমনস্কতার ভান করে, বুদ্ধিবৃত্তিক ও যৌক্তিক শ্রেষ্ঠত্বের দাবি করে, ডোমের মতো গালাগালি, আর লজিকাল ফ্যালাসির ভঙ্গুর প্রাসাদ বানানো আর বেশি থেকে বেশি হলে লিঙ্গুইস্টিক প্যারাডক্স আওড়ানোকে ইসলামের “মুখোশ উন্মোচন” জাতীয় কিছু একটা মনে করে – এই সত্যটা তারা হয়তো ধরতে পারবে না। যেহেতু অ্যাকচুয়ালি চিন্তা করার চাইতে গালাগালি, সস্তা রসিকতা এবং যেকোন মূল্যে তর্কে জেতাই তাদের মূল আগ্রহ। কিন্তু তবুও নাস্তিকতার দৃষ্টিকোন থেকেই এতোশত বুদ্ধিবৃত্তিক হাতসাফাই আর বিজ্ঞানমনস্কতার ভান করার পর, দিন শেষে একজন নাস্তিক শেষপর্যন্ত কখনোই তার বিশ্বাসের সত্যতার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবে না – এটা জানাটা আশ্চর্য রকমের তৃপ্তিদায়ক।
[১] যদি মৃত্যুর পর কোন কিছুই না থাকে, কোন চেতনার (consciousness) অস্তিত্ব না থাকে, কোন সত্ত্বার অস্তিত্ব না থাকে, কোন কিছু না থাকে তাহলে আস্তিক বা নাস্তিক – সবার শেষ মৃত্যুতেই। মৃত্যুর সাথে সাথে আমাদের অস্তিত্ব সমাপ্ত হয়ে যাচ্ছে ।যেহেতু মৃত্যুর পর কেউ ফিরে আসতে পারছে না, কিংবা মৃত্যুর পর কারো অস্তিত্ব থাকছে না তাই মৃত্যুর মাধ্যমে কি সিদ্ধান্ত পাওয়া যাচ্ছে সেটা জানা যাচ্ছে না। যাচাইও করা যাচ্ছে না।