রাসূলুল্লাহ ﷺ এবং তাঁর অনুসারীদের প্রতি চিরন্তন বিদ্বেষ – শত বছর ধরে মুসলিম বিশ্বে দখলদারিত্ব আর নির্যাতন চালিয়ে আসছে ফ্রান্স।
ফ্রান্স বাকস্বাধীনতা আর স্বাধীনতার মূল্যবোধকে সমর্থন করার বলে। মানবাধিকারের কথা বলে। এগুলোর পক্ষে লড়াই করার কথা বলে। পরমতসহিষ্ণুতার কথা বলে। কিন্তু নিজেদের সেক্যুলার আদর্শকে আগ্রাসীভাবে, অস্ত্রের জোরে চাপিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে ফ্রান্স বরাবরই বাকি সবার চেয়ে এগিয়ে। বিশেষ করে মুসলিমদের ওপর সেক্যুলারিসম চাপিয়ে দেয়ার জন্য শত বছরের বেশি সময় ধরে জঘন্য আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ফ্রান্স।
আলজেরিয়াতে এই খুনী, নাস্তিক, ফ্রেঞ্চ বাহিনীর হাতে ১৮৩০ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৫ মিলিয়নের মতো মুসলিম। পঞ্চাশ লক্ষ!। নিচের ভিডিও দুটো থেকে ফ্রেঞ্চ কুকুরদের নৃশংসতা এবং মুসলিমদের প্রতি ঘৃণার কিছু নমুনা দেখতে পাবেন
১। https://tinyurl.com/y4an2vx2
২। https://tinyurl.com/y58xwkrc
৩। ফেইসবুক লিঙ্ক – https://tinyurl.com/y63m637p
ওরা ধর্মনিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা আর মুক্তি নামের মূর্তির পূজা করার দাবি করে। কিন্তু আলজেরিয়া আর উত্তর আফ্রিকাতে যখন ওরা ঔপনিবেশিক লুটপাট চালাচ্ছিল তখন অনর্থক হয়ে গিয়েছিল এসব বুলি। তখন এসব মূর্তির কথা ওরা বেমালুম ভুলে গিয়েছিল।
কী! মুসলিমরা স্বাধীনতা আর ফ্রেঞ্চ গণতন্ত্রকে প্রত্যাখ্যান করে? এতো বড় দুঃসাহস! বুকের মধ্যে বেয়োনেট আর মাথার মধ্যে একটা বুলেট ঢুকিয়ে দাও। আর ওদের পরিবারের মেয়েদের ফ্রেঞ্চ সেনাদের জন্য যৌনদাসীতে পরিণত করো! এটাই ওদের উপযুক্ত পাওনা! ফ্রান্সের আনা গণতন্ত্র আর স্বাধীনতা প্রত্যাখ্যান করে! কতো বড় সাহস! এটাই ওদের দাওয়াই।
কী! মুসলিমদের নারীরা পর্দা করে? আমরা হিজাব আর নিক্বাব অবৈধ ঘোষণা করে আমাদের দখলদারিত্বের ইতিহাস মুসলিম মনে করিয়ে দেবো। আমরা মুসলিমদের মনে করিয়ে দেবো, কীভাবে মুসলিম নারীদের “উন্মুক্ত”করে দেবার এক অবিরাম, কামুক বাসনা নিয়ে আমরা; সভ্য ফরাসীরা ঝাপিয়ে পড়েছিলাম আলজেরিয়ানদের ওপর। মুসলিম নারীর পর্দা পরিণত হয়েছিল আমাদের অবদমিত কামনাবাসনা, লালসা আর ফ্যান্টাসির কেন্দ্রবিন্দুতে।
ঔপনিবেশিকতা বিরোধী বুদ্ধিজীবী, এবং আজন্মের দেশপ্রেমিক ফ্রেঞ্চ নাগরিক ফ্রাঞ্জ ফ্যানোঁ আলজেরিয়াতে ফ্রান্সের পলিসির বর্ণনা দিয়েছিল এই বলে –
“যদি আমরা আলজেরিয়ান সমাজ কাঠামোকে গুঁড়িয়ে দিতে চাই, গুঁড়িয়ে দিতে চাই এর প্রতিরোধের সক্ষমতাকে, তবে অবশ্যই আমাদেরকে সবার আগে জয় করে নিতে হবে তাদের নারীদের। আমাদেরকে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে পর্দার আড়াল থেকে যেখানে তারা নিজেদের লুকিয়ে রাখে এবং সেই ঘরের ভেতর থেকে যেখানে তাদের পুরুষরা তাদেরকে দৃষ্টির আড়াল করে রাখে।”
এগুলো শুধু একটা ভূখন্ডে ফ্রান্সের সীমালঙ্ঘনের অল্প কিছু নমুনা। তাদের কুকর্মের ফিরিস্তি আরো অনেক, অনেক লম্বা। ফ্রান্সের অগণিত অপরাধের মধ্য থেকে আরেকটার কথা এখানে বলা যেতে পারে। ১৯৪৪ সালে ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যানারে সেনেগালে কয়েকশো কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানকে নির্মমভাবে খুন করেছে এই ফ্রান্স। পশ্চিমের বিভিন্ন যুদ্ধে মুসলিম নাগরিকদের খুন করে চলা ফ্রেঞ্চ জেটের গর্জন আর বোমাবর্ষণের আওয়াজের কথাই বা ভুলি কী করে?
ফ্রান্স আজ দাবি করে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর অবমাননা করতে দেয়ার অধিকার সমুন্নত রেখে ওরা নাকি স্বাধীনতা রক্ষা করছে। কিন্তু বাকস্বাধীনতার গল্প বলা ফ্রান্সে জাতীয় পতাকার অবমাননা করা, ইহুদীবাদের বিরুদ্ধে বলা কিংবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার হলোকাস্টের ব্যাপারে ‘সরকারী তথ্য’-এর বাইরে অন্য কিছু বলা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ! এ কেমনতরো বাকস্বাধীনতা? এই বাস্তবতা তাদের মুখের দাবির সাথে একেবারেই বেমানান। ফ্রেঞ্চ সরকার, দেশপ্রেমিক ফ্রেঞ্চ নাগরিক, সরকারকে সমর্থন করা ফ্রেঞ্চ – সবাই একেকটা ভন্ড, প্রতারক আর মিথ্যাবাদী।
আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী মুহাম্মাদ ﷺ-এর সম্মান কিয়ামত পর্যন্ত ঐসব লোকের গলায় অবিনাশী, শক্ত কাঁটার মতো বিঁধে থাকবে যারা তাঁর অবমাননা করা দুঃসাহস দেখায়।
মূল – দা মুসলিম রিয়ালিস্ট