মানবজীবনের উদ্দেশ্য কী?
আমার মনে হয় জীবনের অবশ্যম্ভাবী পরিণতির দিকে তাকালে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া সহজ হয়ে যাবে।
দেখুন, প্রতিটি মানুষের সম্ভাব্য পরিণতি দুটি, হয়-
চিরন্তন সুখ, অথবা
চিরন্তন যন্ত্রনা ও শাস্তি।
অবশ্য নাস্তিকদের বিশ্বাস অনুযায়ী জীবনের সম্ভাব্য পরিণতি একটি, এবং কেবল একটি –
মৃত্যু ও তারপর শূন্যতা (oblivion)।
জন মেইনার্ড কেইন্স বলেছিল, in the long-run we are all dead। এ কাঁচের মধ্য দিয়ে জীবনকে যখন দেখা হবে, তখন ইহকালীন ভোগ, সুখ সন্তুষ্টি, আর ভালো লাগা ছাড়া আর কিছু, সমীকরণে স্থান পাবে না।
শূন্যতায় বিশ্বাসী, দুনিয়াকে দিয়ে নিজের ভেতরের শূন্যতাকে পূরণ করতে চাইবে, এটাই তো স্বাভাবিক। আখিরাতকে প্রত্যাখ্যান করা, বস্তুবাদী দর্শনের যৌক্তিক এবং গাণিতিক ফলাফল হল নায়ালিযম (নেতিবাদ) ও হেইডোনিযম (ভোগবাদ)। শত তত্ত্বের শত কচকচির পর এটাই অনস্বীকার্য বাস্তবতা। চারদিকে তাকিয়ে আজ আমরা যে পৃথিবীকে দেখি, সেটা এই শূন্যতার জ্যামিতির ফল।
জীবনের শেষে আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে সেটাই ঠিক করে দেবে যাপিত জীবনের পথ।
এখন আবার চিন্তা করুন, আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কী?
শূন্যতা পূরণের অর্থহীন, অতৃপ্ত চেষ্টা? নাকি অসীমের জন্য প্রস্তুতি নেয়া?
আমরা কি আখিরাতে বিশ্বাসী হয়েও জীবন কাঁটিয়ে দেবো অবিশ্বাসীর মতো দুনিয়ামত্ত হয়ে?
সুফিয়ান আস সাওরি রাহিমাহুল্লাহ বলতেন,
“দুনিয়ার জন্য তুমি ততটুকু কাজ করো, যতটুকু সময় তুমি এখানে থাকবে। আখিরাতের জন্য ততটুকু সময় কাজ করো যতটুকু সময় তুমি সেখানে থাকবে।”