গোলকধাধাঁ


শুরুটা সাধারণত ভালোই হয়। মুসলিম জাতির দুর্দশা দূর করা এবং বিজয়ের পথ কোনটা, ভেতরে ভেতরে সবাই বোঝে। কিন্তু “কী করা দরকার”, সেটা জানার পরও অনেক সময় করা হয়ে ওঠে না। কষ্ট লাগে। কষ্টবোধের কারণে অনেকে ঝরে যায়। অনেকে থাকে অপেক্ষমান। আর অগ্রবর্তীরা তো অগ্রবর্তী-ই।

শুরুটা হয় চুপচাপ বসে না থেকে, অপেক্ষমান সময়কে কাজে লাগানোর ইচ্ছে থেকে। পথিক বোঝে মূল গন্তব্যের পথে না হেটে সে কিছুক্ষণের জন্য পাশের গলিতে ঢুকেছে। গ্র্যান্ড স্কিম অফ থিংসে, নিজের অবস্থানটা নিয়ে তার মধ্যে কোন বিভ্রান্তি থাকে না। শুরুটা সাধারণত ভালোই হয়।

একসময় আল্লাহ তাঁর বান্দাকে কিছুটা সফলতা দেন। যাচাই করেন। প্রচার বাড়ে, বাড়ে সাময়িক আপাত সাফল্য; অনুসারীর সংখ্যা। প্রায় ভুলে যাওয়া, ঝাপসা অতীতের কোন এক সময়ে গোপন কৌশলি হৃদয়ে যে বীজ বুনেছিল সেটা মাথাচাড়া দেয়। মূল রাস্তা ছেড়ে পথিক পাশের গলিতেই মজা পেয়ে যায়।

গন্তব্যের দিকে যাত্রা শুরুর আগের সময়টুকুকে কাজে লাগানোর জন্য যার শুরু, সেটাকেই গন্তব্যে পৌছানোর পথ হিসেবে বিশ্বাস করার ও করানোর আপ্রাণ চেষ্টা শুরু করে। তাকেও বিভ্রান্ত করে সুকৌশলি আত্মগোপনকারী শত্রু, তার আগে এসে চলে যাওয়া এবং ভুলে যাওয়া আরও শত সহস্রের মতোই।

এ পর্যায়ে এসে সময় ও ঘটনার প্রবাহকে পথিক নতুন এক মাপকাঠিতে বিচার করতে শুরু করে। যে মাপকাঠি তৈরি নিজেকে নিয়ে, নিজের দাওয়াহ, খেদমত, কলম কিংবা নিজেদের গণজোয়ার নিয়ে। ভালোমন্দ, উচিৎ-অনুচিত, লাভক্ষতির বিশ্লেষন শুরু হয়। আল-ফুরক্বান দিয়ে না, নিজে যা করছি তার ওপর ইতিবাচকতা-নেতিবাচকতার হিসেবনিকেশে।

এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি মূল সিলেবাসের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। কানাগলিতে ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকে পথিক। গভীর থেকে গভীরে। প্রতিটি পদক্ষেপের সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে, মূল গন্তব্য থেকে।

তবে…
শুরুটা সাধারণত ভালোই হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *