‘নারীমুক্তির’ অর্থ


ইসলামের বিরুদ্ধে পশ্চিমা প্রপাগ্যান্ডার অবিচ্ছেদ্য অংশ হল ‘নারী’। পশ্চিম যখন নিজের ‘রক্ষণশীলতা’ নিয়ে গর্ব করতো মুসলিম নারী তখন ছিল ‘হারেমজীবি’, ‘কামুক’, ‘যৌনতার বস্তু’। যখন পশ্চিম নিজেকে প্রগতিশীল ভাবতে শিখলো তখন মুসলিম নারী হয়ে গেল ‘বন্দী’, ‘অবরোধবাসিনী’, ‘যৌনতার বস্তু’। দু ক্ষেত্রেই মুসলিম নারীকে ‘মুক্ত’ করতে ‘পশ্চিমা রক্ষক’ দৃঢ়সংকল্প।

২০ বছর আগে আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের বৈধতা দেয়ার জন্য নারীমুক্তির কথা বলা হয়েছিল। গত দুই দশক ধরে অ্যামেরিকান হত্যাযজ্ঞ ও যুদ্ধাপরাধের অজুহাত হিসেবেও বারবার বলা হয়েছে নারীমুক্তির কথা।.অ্যামেরিকার লজ্জাজনক পিছু হটার পর আজ আবারও এই রদ্দি মাল বিক্রির চেষ্টা করছে অনেকে। এদের মধ্যে পশ্চিমারা যেমন আছে তেমনি আছে তাদের কাছে মন ও মস্তিস্ক বন্ধক দেয়া বাদামী চামড়ার আদর্শিক জারজেরাও। আফগান নারীদের মুক্তি আর স্বাধীনতা নিয়ে তারা খুব উদ্বিগ্ন!

কিন্তু পশ্চিমের নারীমুক্তির বয়ানের পেছনে মূল বাস্তবতা মুসলিম সমাজ এবং নারীদের ‘ধর্মান্তর’ করা।

পশ্চিমের একটা নিজস্ব দ্বীন আছে। সেই লিবারেল-সেক্যুলার দ্বীনে নারীত্বের একটা নির্দিষ্ট ধারণা এবং সংজ্ঞা আছে। পশ্চিমারা মনে করে তাদের এই ধারণা সর্বজনীন। তাদের ঠিক করে দেয়া নারীত্বের এই ধারণাকেই গ্রহণ করতে হবে পুরো বিশ্বকে।

নারীত্বের যে ধারণা পশ্চিমা ছাঁচের সাথে মিলবে না সেটা বন্দীত্ব। সেটা পরাধীনতা। যারা নারীত্বের পশ্চিমা সংজ্ঞা গ্রহণ করবে না। তারা পশ্চাৎপদ। এই পশ্চাৎপদ সমাজের নারীদের ‘মুক্ত’ করতে চায় পশ্চিমা ‘রক্ষক’। আনতে চায় সভ্যতার আলোতে।

আজ থেকে দেড়-দুশো বছর আগে পশ্চিমারা বলতো ‘অসভ্য’ জাতিদের ‘সভ্য’ করার জন্য কলোনিয়ালিসম দরকার। আজকে ওরা বলে ‘পরাধীন’ নারীকে ‘মুক্ত’ করার জন্য সামরিক কিংবা কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ দরকার। .মূল বক্তব্য সেই একই। পশ্চিম তার লিবারেল-সেক্যুলার দর্শন কাঠামোকে ‘মুক্তি’, ‘অধিকার’ ‘স্বাধীনতা’র নাম দিয়ে বাকি বিশ্বের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। যে এতে বাঁধা দেবে সেই সন্ত্রাসী, উগ্রবাদী, বর্বর। নতুন গল্প, সেই পুরনো গল্পের মতোই।

গালভরা বুলির আড়ালে আসলে ওরা আমাদের নিয়ন্ত্রন করতে চায়। আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চায় ওদের দ্বীন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *