রিমাইন্ডার: উদ্দেশ্য


হায় আফসোস! আশা-ভরসা ও কল্পনাবিলাসী পরিকল্পনা মানুষকে ধ্বংস ও বরবাদ করে দিয়েছে। মুখে কথার ফুলঝুরি আছে, কিন্তু কাজের কোন উদ্যোগ নেই। ঈমান আছে ইয়াক্বিন নেই। মানুষের অবয়ব চোখে পড়ে, কিন্তু তা অন্তঃসারশূন্য। দর্শনার্থীর ভিড় আছে, হৈ-হট্টগোলও আছে, কিন্তু এমন একজন বান্দা চোখে পড়ে না, যার অন্তর আছে, মন যার প্রতি আকৃষ্ট হয়। লোকজন আসে, তারপর চলে যায়। তারা সবকিছু জেনেছে, তারপর বেমালুম ভুলে গেছে।
হাসান আল-বাসরি রাহিমাহুল্লাহ

কথাগুলো হাজার বছর আগে বলা। কিন্তু আমাদের সাথে মিলে যায়। না, পুরোপুরি মেলে না। আমাদের অবস্থা আরো খারাপ। জমাট বাঁধা অন্ধকারে বসে আছি। কোন জেদ থেকে না। কোন উদ্দেশ্য নিয়ে না। কোন মোহে না। নিছক নির্জীব আমরা জীবন্ত হবার ভান করে, মদ, মাংস, মাৎস্যর্যে মেতে, যান্ত্রিক উন্মাদনায়, রুটিনমাফিক নষ্ট হচ্ছি। অন্তহীন সুরঙ্গের গভীর থেকে গভীরে ঢুকে যাচ্ছি। কী করছি, কেন করছি চিন্তা করছি না। সবাই করছে, আমিও করছি – নিজেকে বোঝাচ্ছি। বর্তমানকে আকড়ে ধরার নিরন্তর চেশ্তায় ভবিষ্যৎ ভুলে যাচ্ছি, ভুলে থাকছি। কিন্তু মুঠো ভরে পানি তো ধরে রাখা যায় না। বর্তমানকে চিরন্তন ভেবে তো বাঁচা যায় না। ভুল বললাম। বাঁচা যায়। পশুরা তো এভাবেই বেঁচে থাকে।
কিন্তু মানুষ?

এটাই কি জীবন? জেগে ওঠা, খাওয়া, ঘুম, টাকার পেছনে ছোটা, মানুষের সামনে সেলোফিনে কিংবা সেলফিতে মোড়ানো নিজের একটা মিথ্যে প্রতিচ্ছবি তৈরি করা, বিক্ষিপ্ত যৌনতা, কিছু মুহূর্তের জন্য পশু হওয়া বাকি সময়টুকু পশুদের মতো করেই কাঁটিয়ে দেয়া – সর্বসাকুল্যে আমাদের যাপিত জীবন? এই প্রাকৃত অস্তিত্ব?

এ জন্যই এসেছি? এভাবেই চলে যাবো?

আল্লাহ্‌র দিকে ফিরে আসার সময় কি হয় নি এখনো?


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *